Monday, September 15, 2025
বাঙালি কাউন্টডাউন
HomeScrollদশমীতে অরন্ধন, বন্দোপাধ্যায় বাড়ির জৌলুস কমলেও রীতিতে ভাঁটা পড়েনি
Bandyapadhyay's house in Baruipur

দশমীতে অরন্ধন, বন্দোপাধ্যায় বাড়ির জৌলুস কমলেও রীতিতে ভাঁটা পড়েনি

বনেদি বাড়ির আনাচে-কানাচে এখন পুজো-পুজো মেজাজ

বারুইপুর: বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর জোরদার প্রস্তুতি চলছে শহর থেকে জেলা সর্বত্র। সমস্ত বনেদি বাড়ির আনাচে-কানাচে এখন পুজো-পুজো মেজাজ। বারুইপুরের বন্দ্যাপাধ্যায় বাড়ির পুজোর শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। পুরনো দিনের জৌলুস কিছুটা কমলেও ২৭৬ বছরের রীতিতে আজও ভাঁটা পড়েনি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বারুইপুর কল্যানপুর বন্দোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজোয় (Durga Puja Bandyapadhyay’s house in Baruipur)।

পুজোর নৈবদ্য সাজনো থেকে ফল কাটা, পুজোর জোগাড় সবই করেন বাড়ির মেয়েদের সাথে ছেলেরা। সেই রীতি এখনও অব্যাহত আছে বারুইপুরের আদি গঙ্গা সংলগ্ন কল্যানপুরের বন্দোপাধ্যায় বাড়িতে। যা দেখতেই পুজোর কদিন মানুষজনের বিশেষ ভিড় লেগে থাকে। ১১৫৭ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থেকে জমিদার সহস্ররাম বন্দোপাধ্যায় এসে বন্দোপাধ্যায় বাড়িতে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে বংশ পরম্পরায় দুর্গাপুজো (Durga Puja) হয়ে আসছে, দুর্গা মন্দিরে। দুর্গা মন্দিরে চলছে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রঙের প্রলেপ পড়ছে মন্দিরে। বর্তমানে এই বাড়ির সদস্যরা কেউ মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোর এমনকী কেউ আমেরিকায় থাকেন। সবাই বাড়ির পুজোর টানে চলে আসেন ওই কয়েকটা দিন।

আরও পড়ুন: বিভূতিভূষণের ‘ধুনির ঘরের পুজো’য় আজও নেই ধর্মীয় ভেদাভেদ

রথের দিন থেকে কাঠামোর পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়। প্রতিপদেই বসে ঘট। কুলপুরোহিতের সঙ্গে তন্ত্রধারক মিলে শুরু করেন চণ্ডীপাঠ। বাড়ির গিন্নি তৃপ্তি বন্দোপাধ্যায় জানান, ‘যেদিন থেকে ঘট বসে দুর্গা মন্দিরে, সেইদিন থেকেই পরিবারে মাছ ছাড়া মাংস, ডিম, পেঁয়াজ এসব কিছুই খাওয়া হয় না। যা চলে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত ।বকখালির নবগ্রাম থেকে পুজোর কয়েকটা দিন কাজের জন্য ছেলেরা আসে, তারাই পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে গঙ্গাজল আনা সবটা করে থাকে। মায়ের বোধন শুরু হয় দরমার বেড়া দিয়ে বেলগাছ ঘিরে।

বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির গৃহবধূ অঞ্জনা বন্দোপাধ্যায় জানালেন, ‘পুরানো ঐতিহ্য ধারাকে বজায় রেখেই একমাত্র এই বাড়িতেই পুজার কয়েকটা দিন ফলকাটা থেকে শুরু করে নৈবদ্য সাজানো সব কাজ বাড়ির ছেলেরাই করে। দীক্ষিত মহিলারাই পায় পুজোর ভোগ রান্নার অনুমতি । বংশ পরম্পরায় বাড়ির পরিবারের গৃহবধূরা পালাক্রমে মায়ের বরন সারেন।’তিনি আরও বলেন, ‘কলা বৌ স্নান যখন আদি গঙ্গায়, পুকুরে হয়,তখন এই পরিবারে সেই স্নান হয় মন্দিরের ভিতরেই। সপ্তমীর দিন মন্দির সংলগ্ন চাতালে যূপ কাষ্ঠে হয় পাঁঠা বলি, এছাড়া অষ্টমীর দিন ও সন্ধিপুজার সময় পাঁঠাবলির রীতি রয়েছে। এমনকি, নবমীর দিনও পাঁঠা ও শস্য বলি হয়ে থাকে। পুজোর কয়েকটা দিন মায়ের ভোগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সপ্তমী থেকে নবমী মাকে ভোগে নানাপদ মাছ, মাংস ,ডাল, খিচুড়ি সবই দেওয়া হয়। কিন্তু দশমীর দিন মাকে পান্তা ভাত, কচু শাক দেওয়া হয়। কারণ, দশমীর দিন অরন্ধন হিসেবে পালিত হয়। সে দিন রান্না হয় না। নবমীর ভোগের পর ফের দশমীর রান্নার আয়োজন করা হয়। দশমীর দিন মহিলাদের সিঁদুরখেলা দেখতেই ভিড় জমে যায় বাড়িতে। পূজাকে ঘিরে পরিবারের পাশাপাশি এলাকার মানুষজনও মেতে ওঠেন বন্দোপাধ্যায় বাড়ির মাতৃবন্দনায়।

অন্য খবর দেখুন

Read More

Latest News